প্রাণী টিস্যু
কলা গঠনকারী কোষের সংখ্যা, বৈশিষ্ট্য এবং আন্তঃকোষীয় পদার্থ বা মাতৃকার বৈশিষ্ট্য, পরিমাণ, উপস্থিতি, অনুপস্থিতির ভিত্তিতে কলা প্রধানত চার প্রকার হয়। যথা- আবরণী কলা, যোজক কলা, পেশি কলা এবং স্নায়ু কলা।
ক) আবরণী কলা (Epithelial Tissue)
এই কলার কোষগুলো সন্নিবেশিত এবং একটি ভিত্তিপর্দার উপর বিন্যস্ত থাকে। এই কলার মাতৃকা থাকে না। কোষের আকৃতি, প্রাণী দেহে অবস্থান ও কাজের প্রকৃতি ভেদে এ কলা তিন ধরনের হয়ে থাকে। যথা-
১) আঁইশাকার (Squamous)
২) ঘনাকার (Cuboidal)
৩) স্তম্ভাকৃতি (Columnar)
খ) যোজক কলা (Connective Tissue)
যোজক কলায় মাতৃকার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি এবং কোষের সংখ্যা কম। গঠন ও কাজের ভিত্তিতে যোজক কলা প্রধানত তিন ধরনের হয়। যথা- ফাইব্রাস, স্কেলেটাল এবং তরল যোজক কলা।
গ) পেশি কলা (Muscular Tissue)
ভ্রুণীয় মেসোডার্ম হতে উৎপন্ন সংকোচন প্রসারণশীল বিশেষ ধরনের কলাকে পেশি কলা বলে। দেহের বিভিন্ন অঙ্গের সঞ্চালন ও চলন নিয়ন্ত্রণ করে এই কলা। অবস্থান, গঠন এবং কাজের ভিত্তিতে পেশি কলা তিন ধরনের। যথা- ঐচ্ছিক, অনৈচ্ছিক এবং হৃদপেশি (Cardiac Tissue)।
১) ঐচ্ছিক পেশি টিস্যু: ঐচ্ছিক পেশি প্রাণির ইচ্ছানুযায়ী সংকুচিত বা প্রসারিত হয়। এই পেশি অস্থিতন্ত্রে সংলগ্ন থাকে। যেমন- মানুষের হাড় ও পায়ের পেশিসমূহ।
২) অনৈচ্ছিক পেশি টিস্যু: এই পেশি টিস্যুর সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণির ইচ্ছাধীন নয়। অনৈচ্ছিক পেশি প্রধানত দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গাদির সঞ্চালনে অংশ নেয়। যেমন- অন্ত্রের ক্রমসংকোচন।।
৩) হৃদপেশি: মেরুদণ্ডী প্রাণিদের হৃৎপিণ্ড যে বিশেষ ধরনের অনৈচ্ছিক পেশি দিয়ে গঠিত, তাকে কার্ডিয়াক পেশি বলে। হৃৎপিণ্ডের সকল হৃৎপেশি একত্রে সমন্বিতভাবে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়।
ঘ) স্নায়ু কলা (Nervous Tissue)
যে বিশেষ কলা দিয়ে স্নায়ুতন্ত্র গঠিত তাকে স্নায়ু কলা বলে। স্নায়ু কলা যে বিশেষ কোষ দ্বারা গঠিত তাকে স্নায়ুকোষ বা নিউরন বলে।
আরও দেখুন...